প্রকৃতিতে বিদ্যমান হাজারো রঙের ছড়াছড়ি। বোঝা যায়, কোনো না কোনো শিল্পী তাঁর কুশলী পরিচর্যায় এই রং এঁকেছেন। সেই শিল্পী হলেন মহান আল্লাহ। কত সূক্ষ্ম ও সুনিপুণভাবে তিনি এই বিশ্বজগৎ সৃষ্টি করেছেন! তিনি ফুল-ফসল আর পত্রপল্লবের অনুপম সৃজনে প্রকৃতিকে করেছেন নয়নাভিরাম। আর ঋতুবৈচিত্র্যের পালাবদলে দিয়েছেন অনন্য সৌন্দর্য। দিগন্তবিস্তৃত ফসলের মাঠে ঢেউ উঠে উজ্জ্বল ধান ক্ষেতের সোনালি গুচ্ছে। পাকা ধানের সোনালি রং দেখে কৃষকের মনে জেগে ওঠে আনন্দের হিল্লোল। আল্লাহর অপূর্ব সৃষ্টি : এসব আল্লাহর কুদরতের প্রমাণ। তিনিই নিজ কুদরতে শক্ত মাটির বুক চিড়ে এই ফল ও ফসল বের করে এনেছেন। এ বিষয়ে কোরআনে বর্ণনা এমন : ‘মানুষ তার খাদ্যের প্রতি লক্ষ করুক। আমি তো অঝোরধারায় বৃষ্টি বর্ষণ করেছি। তারপর মাটিকে বিদীর্ণ করেছি।
আর তাতে উৎপন্ন করেছি শস্যাদি, আঙুর, শাকসবজি, জলপাই, খেজুর, বহু বৃক্ষবিশিষ্ট বাগান, ফলফলাদি ও ঘাস। এসব তোমাদের ও তোমাদের পালিত পশুকুলের জীবন ধারণের জন্য।’ (সুরা : আবাসা, আয়াত : ২৪-৩২) ফুল সৌন্দর্যের প্রতীক। সৌন্দর্যের প্রতি মানুষের আকর্ষণ সহজাত। ফুলের পাপড়ির বিন্যাস, রঙের বাহার ও হৃদয় জোড়ানো ঘ্রাণ মানুষের মনকে ভরে তোলে অপার্থিব আনন্দে। সৌন্দর্য বর্ধনে ফুলের ব্যবহার বিশ্বজুড়ে। মানুষের সৌন্দর্যচর্চায় ফুলের অবদান অসামান্য। সভ্যতার পরতে পরতে ছড়িয়ে আছে ফুল। প্রাচীনকাল থেকেই বিভিন্ন সভ্যতায় ফুলের নানাবিধ ব্যবহার চলে আসছে। এ ফুল এমনিতেই ফুটে না। এ ফুল কোনো মালির করুণা নয়। বাহারি ফুল মহান আল্লাহর কুদরতের প্রমাণ। চাঁদের দিকে তাকিয়ে মহানবীর সুসংবাদ : এমন কেউ নেই, চাঁদের জ্যোত্স্না যাকে মুগ্ধ করে না।
ছোট্ট শিশু থেকে শুরু করে শিল্পী, কবি, সাহিত্যিক ও প্রকৃতিপ্রেমীর কাছে জ্যোত্স্না রাতের সৌন্দর্য চিরভাস্বর। চাঁদ শুধু প্রকৃতির আলোরই উৎস নয়, এই চাঁদ, চাঁদের সৌন্দর্য ঈমানদারের অন্তরে প্রভুপ্রেমের বারতা নিয়ে আসে। এই চাঁদ মুমিনের হৃদয়ে তার প্রভুর স্মরণ জাগিয়ে তোলে। জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘এক রাতে আমরা রাসুল (সা.)-এর কাছে ছিলাম। হঠাৎ তিনি পূর্ণিমার রাতের চাঁদের দিকে তাকিয়ে বলেন, শোনো, শিগগিরই (কিয়ামতের দিন) তোমরা তোমাদের রবকে স্পষ্টভাবে দেখতে পাবে, যেমন স্পষ্ট ওই চাঁদকে দেখতে পাচ্ছ। তাঁকে দেখতে তোমরা কোনো প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হবে না।’ (বুখারি শরিফ, হাদিস : ৫৫৪) বিস্ময়কর সৃষ্টিজগতে মুগ্ধতা : প্রজাপতির রং ছোট-বড় সবাইকে বিমোহিত করে। চিত্র-বিচিত্র নকশা নিয়ে প্রজাপতি ছদ্মবেশ ধারণ করে।
প্রজাপতিরা বিস্ময়কর দ্রুতগতিতে নতুন নতুন রং ধারণ করতে পারে। কোথায় পেল প্রজাপতি এই রঙিন ডানা? এমনিতেই কি প্রজাপতির রং বদলায়? এ রঙের পেছনে কি কোনো তুলি নেই? কোনো শিল্পী নেই? হ্যাঁ, আছে। কিন্তু সে শিল্পীকে দেখা যায় না। তিনিই আল্লাহ। গোটা বিশ্বজাহান যাঁর অসীম ক্ষমতার অধীন। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘এবং তিনি (আল্লাহ) তোমাদের জন্য পৃথিবীতে যেসব রংবেরঙের বস্তু ছড়িয়ে দিয়েছেন, সেগুলোতে ওই সম্প্রদায়ের জন্য নিদর্শন আছে, যারা উপদেশ গ্রহণ করে।’ (সুরা : নাহল, আয়াত : ১৩)
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।